স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ এর পরিচিতি

স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ নামটি জানেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছেন। তবে আপনি স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানেন কি? যদি হামজা ইউসুফ স্কটল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আপনি না জানেন  তাহলে আপনার জন্যই আজকে আমাদের এই আলোচনা। তাহলে আলোচনাটি শুরু করা যাক।

স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে

স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ। হামজা ইউসুফের পূর্বে স্কটল্যান্ডে কোন মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হননি। ৩৭ বছর বয়সী এই নেতা স্কটল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী। হামজা ইউসুফ স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (SNP) একজন নেতা হিসেবে ২০২৩ সালে ক্ষমতায় আসন গ্রহণ করেন। তবে তিনি পূর্বে ২০১১ সালের দিকে দেশটিতে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি তৎকালীন সময়ে উর্দু ও ইংরেজিতে শপথ গ্রহণ করেন। ২০২৪ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী পর থেকে পদত্যাগ করেন। তবে এবার হামজা ইউসুফ অর্থাৎ স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ এর পরিচিতি

হামজা ইউসুফ এর পৈতৃক নিবাস অর্থাৎ বাবার বাড়ি ছিল পাকিস্তানে। ১৯৬০ সালের দিকে তারা পাকিস্তান থেকে স্কটল্যান্ডে হস্তান্তরিত হন।অন্যদিকে হামজা ইউসুফের মা কেনিয়াতে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত একজন নাগরিক।

হুমজা হারুন ইউসুফ ৭ এপ্রিল ১৯৮৫ সালে সাউথ ল্যানারকশায়ারের রাদারগ্লেন ম্যাটারনিটি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম প্রজন্মের পাকিস্তানি পাঞ্জাবি মুসলিম অভিবাসীদের সন্তান। তার পিতা মিয়ান মুজাফ্ফর ইউসুফ আরাইন পাকিস্তানের পাঞ্জাবের মিয়া চান্নুতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬০-এর দশকে পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে আসেন। পেশায় তিনি ছিলেন হিসাবরক্ষক। ইউসুফের পিতামহ ১৯৬০-এর দশকে ক্লাইডব্যাঙ্কে সিঙ্গার সেলাই মেশিন কারখানায় কাজ করতেন। ইউসুফের মা শায়েস্তা ভুট্টা কেনিয়ার নাইরোবিতে পাকিস্তানি-পাঞ্জাবি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

হুমজা ইস্ট রেনফ্রুশায়ারের মের্নস প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি দুইজন জাতিগত সংখ্যালঘু ছাত্রদের একজন ছিলেন। পরে তিনি গ্লাসগোর হাচেসন্স গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন, যেখানে আধুনিক অধ্যয়ন তাকে রাজনীতিতে আগ্রহী করে তোলে।

হুমজা ১১ সেপ্টেম্বরের হামলাকে “যে দিনটি পৃথিবী এবং আমার জন্য পরিবর্তন করেছিল” বলে উল্লেখ করেন। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। হামলার আগে, তিনি রেজিস্ট্রেশন ক্লাসে দুই সহপাঠীর কাছাকাছি ছিলেন, কিন্তু হামলার পর তারা তাকে প্রশ্ন করেছিল, “কেন মুসলমানরা আমেরিকাকে ঘৃণা করে?”

ইউসুফ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন

২০১২ সালে ইউসুফ স্কটিশ সরকারের একজন জুনিয়র(কনিষ্ঠ) মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। সে সময় তিনি স্কটল্যান্ডে নিযুক্ত হওয়া জুনিয়র (সর্বকনিষ্ঠ) এবং প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি বিচার বিষয়ক সচিব হিসেবে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন এবং ২০২১ সালের মে মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। ২০২৩ সালে হামজা ইউসুফ স্কটল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী হতে পদত্যাগ

এসএনপি এবং স্কটিশ গ্রিনসের মধ্যে বুট হাউস চুক্তি বাতিল করার পর, ইউসুফ নিজের এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের সম্মুখীন হন। ২৯ এপ্রিল ২০২৪-এ তিনি এসএনপি নেতা ও স্কটল্যান্ডের প্রথম মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। জন সুইনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তার উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ৭ মে ইউসুফ আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নসমূহ

হামজা ইউসুফ সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা অনেকেই অনুসন্ধান করেন। এসকল প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে:

প্রশ্ন: হুমজা ইউসুফ কোন দেশের নাগরিক? 

উওর: হামজা ইউসুফ স্কটল্যান্ড নাগরিক। তবে তার পৈতৃক নিবাস পাকিস্তানে।

প্রশ্ন: হামজা ইউসুফ কোন ধর্মের?

উওর: হামজা ইউসুফ মুসলিম ধর্মের।

প্রশ্ন: বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমদের তালিকায় হামজা ইউসুফ কত নম্বরে রয়েছেন?

উওর: বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমদের তালিকায় হামজা ইউসুফ ৩৬ নম্বরে রয়েছেন।

শেষ কথা

আশা করি আমরা আপনাকে, স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হামজা ইউসুফ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পেরেছি। তবে হামজা ইউসুফ সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে আপনি আমাদের কমেন্ট করে জানতে পারেন।