যে শহরে পায়রা মনোরঞ্জন করে 

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে স্বাধীনভাবে বেড়ানোর জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। এছাড়া ট্যাক্সি নিয়ে বেড়ানো যায়। 

লন্ডনে রয়েছে পরিচ্ছন্ন রাস্তা, তার পাশেই ঝকঝকে বাড়ি বা অট্টালিকা। তবে কোনও বাড়িই বেশি উঁচু নয়। লন্ডনে দেখার আছে – অ্যালবার্ট হল, সায়েন্স মিউজিয়াম, অ্যালবার্ট মনুমেন্ট, কেনসিংটন গার্ডেন , হাইড পার্ক, পিকাডেলি সার্কাস, ট্র্যাফেলগার স্কোয়ার, মহারানী ভিক্টোরিয়ার ষ্ট্যাচু। 

ট্রাফেলগার স্কোয়ারে আছে যুদ্ধে নেপোলিয়নকে হারানোর চিহ্ন লর্ড নেলসনের মূর্তি। তাকে কেন্দ্র করে সাত দিকে ধাবমান সাতটি রাস্তা। চার কোনায় চারটি ব্রোঞ্জের সিংহ বসানো। এখানেই প্রশস্ত স্থান ঘিরে সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পায়রারাও বাদ যায় না। ঝাঁকে ঝাঁকে নির্ভিক পায়রারা মানুষের মনোরঞ্জন করে থাকে। 

লন্ডনবাসীর সঠিক সময় জানানোর জন্য রয়েছে ল্যান্ডমার্ক বিগবেন। এটি ১৮৫১ খৃষ্টাব্দে উঁচু গম্বুজের ওপর বসানো হয়। ওজন ১৩ টন। নাম হয় ক্লক টাওয়ার। এখানে রোমান হরফের সংখ্যাগুলো দুই ফুট করে লম্বা। মিনিটের কাঁটা ১৪ ফুট লম্বা। ঘড়ির মাথায় ওঠার জন্য আছে আঁকাবাঁকা ৩৭৪ টি সিঁড়ি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় বড় ঘড়ি রয়েছে। যা কি না ওই সব দেশের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় ঘড়ি হিসেবে খ্যাতি কুড়াচ্ছে। তবে বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে বিখ্যাত ঘড়ি হল এই বিগবেন। এ ঘড়িটি লন্ডন শহরের ওয়েস্ট মিনিস্টারের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের পূর্ব দিকের সীমানায় অবস্থিত। ঘড়ির নামানুসারে মিনারের নাম রাখা হয়েছে, ক্লক টাওয়ার। প্রথম দিকে প্রতি সপ্তাহে একবার করে এ ঘড়িতে চাবি দিতে হতো। এই চাবি ঘোরাতে দু’জন করে লোক লাগত। বহুদিন হয় এ ঘড়ি আর ঘোরাতে হয় না। কারণ, এটি এখন চলে বিদ্যুতের সাহায্যে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আজ পর্যন্ত কোন দিন এই ঘড়ি এক সেকেন্ড ফার্স্ট কিম্বা স্লো হয়নি। সঠিকভাবে চলছে বলেই বিগবেন নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। 

বাকিংহাম প্যালেসে রাজা বসবাস করে থাকেন। সেখানকার গার্ড পরিবর্তন একটা দর্শনীয় বিষয়। লাল – কালো পোশাকে মিউজিকের সঙ্গে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলার মাধ্যমে গার্ড আসে ও যায়। 

ওয়েস্টমিনস্টার অ্যানিতে গির্জাকে কেন্দ্র করে অ্যাবি গড়ে উঠেছে। ১০৬৬ খৃষ্টাব্দ থেকে ১৬০০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত ভাঙচুর করে অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: যেখানে মৃত মানুষের আত্মা দুর্ঘটনা ঘটায়

১৮০০ খৃষ্টাব্দে তৈরি হয় দু’টি টাওয়ার। ভেতরে রাখা হয়েছে আমেরিকার সর্বোচ্চ সন্মান পদকস্তবক কংগ্রেসিওনাল মেডেল। প্রশস্ত স্থানে উপাসনার সাজসজ্জা। স্যাংকচুয়ারি হল অ্যাবির প্রধান অংশ। পথিক স্থাপত্যের গির্জা গোটা বিশ্বের গির্জাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভাগে ভাগে রাজা -রানীর অভিষেক স্থান ও স্মৃতিসৌধে ভরা চার্চটি। আছে পোয়েটস কর্নার। সেখানে বিখ্যাত বহু কবি ও সাহিত্যিকদের মূর্তি গড়ে সমাধির সৌধ তৈরি করে রাখা হয়েছে। 

টাওয়ার অব লন্ডনে সংরক্ষিত দুর্গের মধ্যে রয়েছে রাজপরিবারের মূল্যবান সম্পত্তি। আছে রাজার মুকুট দি ইম্পেরিয়াল স্টেট ক্রাউন। তার মধ্যে শোভা পাচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ হিরে -স্টার অব আফ্রিকা। আর আছে রানী এলিজাবেথের মাথার মুকুট, সেখানে শোভা পাচ্ছে ‘কোহিনূর ডায়মন্ড’। 

লন্ডনের জুয়েল হাউসে রয়েছে রাজপরিবারের ব্যবহৃত স্বর্ণপাত্র, গহনা, হিরে, মাণিক্য, বিখ্যাত পাথর ইত্যাদি। 

লন্ডনের পার্লামেন্ট হাউস, ক্লিওপেট্টাস নিডলসও কম আকর্ষণীয় নয়। 

-লিয়াকত হোসেন খোকন

Leave a Comment